সুনামগঞ্জে হরতালের সমর্থনে রাজপথে রয়েছেন জেলার হেফাজত নেতা-কর্মীরা। লাঠি-সোটা নিয়ে সকাল থেকেই তারা সুনামগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো নিজেদের দখলে রেখেছেন। সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে তারা পিকেটিং করলেও পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই হেফাজতের নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী বক্তব্য ও অভ্যন্তরীণ যানবাহন চলাচলে বাধা দিলেও তারা ছিলেন নীরব।
সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা, ষোলঘর পয়েন্ট, হোসেন বখত চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এসব এলাকায় উপস্থিত হেফাজত কর্মীদের অধিকাংশই মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের হাতে ছিল লাঠি ও রড।
অন্যদিকে, হেফাজতের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ও গণপরিবহন।
বাসচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আমরার গাড়ি বার করতে কুনো নিষেধ নাই। মালিক কইসে নিজের রিস্কে বারোইতাম। গাড়ি নিয়া বারোইলে হেফাজতের নেতারা আমরার গাড়ি আটকাই দেয়, ভাঙার চেষ্টা করে। এর লাগি আমরা বারোইসি না।’
হরতালে বন্ধ রাখা হয়েছে দোকান
আরেক বাসচালক মো. রায়হান বলেন, ‘বাস বন্ধ রাখলে আমরারই ক্ষতি। স্টাফরে রোজ দেওয়া লাগে তিন শ টাকা। অখন দুনিয়া যেছা (যেখান) দিকে যাউক, এইটা ঠিক রাখা লাগে।’
এদিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে যানবাহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। রিকশা হোক বা মোটরসাইকেল, বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’
কলেজছাত্র রফিক আহমেদ বলেন, ‘আমার পরিবার তাখে জামালগঞ্জ। মা হঠাৎ করি অসুস্থ অই গেছেন। রাইতো দেখছিলাম বাস-সিএনজি চলব, অখন দেখি সব বন্ধ।’
রুবিনা পারভিন নামে এক নারী বলেন, ‘রিকশাত উঠছিলাম, এরা লাঠি দেখাইয়া রিকশা ড্রাইবাররে (চালক) ডর দেখাইছে। কইসে রিকশা চলত না। এর লাগি এখন হাটিয়া কাজও যাইরাম।’
লাঠি নিয়ে রাস্তায় কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাসন নগর মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হুজুর দেলোয়ার হোসাইন কইছেন, হরতালো আইতে। আমরা আইছি। আর লাঠি কেনে, ইকান কওয়ার দরকার মনে করি না।’
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, হরতালে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেদিকে তাদের নজর রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর অবস্থা মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।